আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার উত্তেজনা দিন দিন বাড়ছেই। এর মধ্যেই ইউক্রেন সফরে যাচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ইউক্রেন সংকট নিয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই আগামী সপ্তাহে তিনি দেশটিতে সফর করবেন।
এই সফরের পরই তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে আলাপ করবেন। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, রাশিয়া হয়তো ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে। দুদেশের মধ্যে যেন কোনো ধরনের রক্তপাত না হয় সেজন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে চান বরিস জনসন।
ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করেছেন পুতিন। অপরদিকে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোটও ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী দেশগুলোতে সেনা মোতায়েন করছে বা সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে। কেউই শান্তিপূর্ণ অবস্থান তৈরির মতো কিছু করছে না।
পুতিন বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো রাশিয়ার প্রধান নিরাপত্তা দাবিগুলোর কোনো সমাধান করেনি। তবে তিনি আলোচনার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ইউক্রেনের ওপর আক্রমণ করার সক্ষমতা এখন রাশিয়ার রয়েছে। এদিকে বরিস জনসন সতর্ক করে বলেছেন, রাশিয়া আক্রমণ করলে কোনো পক্ষের জন্যই এটি সুফল বয়ে আনবে না।
ব্রিটেন বলছে, রাশিয়া যদি ইউক্রেনে কোনো ধরনের হামলা চালায় তবে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোকেও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এক বিবৃতিতে বরিস জনসনের এক মুখপাত্র বলেন, প্রধানমন্ত্রী জনসন কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে চান। তিনি ইউরোপে কোনো ধরনের রক্তপাত চান না।
রাশিয়াকে পিছু হটার প্রয়োজনীয়তা এবং কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তিনি চলতি সপ্তাহে পুতিনের সঙ্গে আলাপ করবেন। ইউক্রেনে অস্ত্র এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা দিচ্ছে ব্রিটেন। তবে যুদ্ধের জন্য দেশটিতে সামরিক বাহিনী মোতায়েনের ইচ্ছা নেই বলে জানিয়েছে তারা।
এদিকে ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো মস্কোর প্রধান দাবিকে গ্রাহ্য করেনি অভিযোগ করে আগের অবস্থানে অনড় রয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে পুতিন বলেছেন, ওয়াশিংটন ও ন্যাটোর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন তিনি। পুতিন-ম্যাক্রোঁর ফোনালাপ প্রসঙ্গে ক্রেমলিন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর জবাবে রাশিয়ার প্রধান উদ্বেগকে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি, আলোচনায় এটি তুলে ধরা হয়েছে।
মস্কোর দাবি, ওয়ারশ চুক্তির আগে পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর সামরিক উপস্থিত যেমন ছিল সে অবস্থায় ফিরে যেতে হবে ও রুশ সীমান্তে আক্রমণাত্মক অস্ত্র মোতায়েন না করা যাবে না। সাবেক সোভিয়েত দেশ ইউক্রেনকে ন্যাটো থেকে চিরতরে বহিষ্কার করারও দাবি জানিয়ে আসছে রাশিয়া।